স্বাদে নয়, গুণেও অনন্য পেয়ারা
বিডিকষ্ট ডেস্ক
পেয়ারার আদি নিবাস হলো মেক্সিকো, মধ্য আমেরিকা ও দক্ষিণ-পূর্ব আমেরিকায়। পেয়ারা খুব বেশি পরিমাণে জন্মে দক্ষিণ এশিয়া, আফ্রিকা, ক্যারিবীয় অঞ্চল, হাওয়াই, নিউজিল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়ায়। সারা বিশ্বে পেয়ারার প্রায় ১০০টিরও বেশি প্রজাতি রয়েছে। গুণী ফল হিসেবে পেয়ার স্বীকৃতি রয়েছে বিশ্বজুড়ে। কারণ এতে রয়েছে কমলার চেয়ে চার গুণ বেশি ভিটামিন সি। পেয়ারার খোসায় রয়েছে আরো বেশি ভিটামিন সি, কমলার চেয়ে পাঁচ গুণ বেশি!
পেয়ারার ইংরেজি নাম Guava। ইংরেজি এই নামটি এসেছে স্প্যানিশ শব্দ guayaba থেকে।
পেয়ারার বৈজ্ঞানিক নাম হলো Psidiun guajava।
পেয়ারা সহজলভ্য বলে অনেকেই একে পাত্তা দিতে চান না। কিন্তু পেয়ারা মোটেও ফেলনা ফল নয়। পুষ্টিগুণের কথা বিচার করলে পেয়ারা বিশ্বের সেরা ফলগুলোর মধ্যে একটি। পেয়ারার খাদ্যযোগ্য ১০০ প্রতি গ্রাম অংশে রয়েছে –
খাদ্যশক্তি- ৬৮ কিলোক্যালরি
শর্করা- ১৪.৩২ গ্রাম
চিনি- ৮.৯২ গ্রাম
খাদ্যআঁশ- ৫.৪ গ্রাম
চর্বি- ০.৯৫ গ্রাম
আমিষ- ২.৫৫ গ্রাম
ভিটামিন এ- ৩১ আইইউ
বিটা ক্যারোটিন- ৩৭৪ আইইউ
থায়ামিন- ০.০৬৭ মিলিগ্রাম
রিবোফ্লেভিন- ০.০৪ মিলিগ্রাম
প্যানটোথেনিক অ্যাসিড- ০.৪৫১ মিলিগ্রাম
নিয়াসিন- ১.০৮৪ মিলিগ্রাম
ভিটামিন বি৬- ০.১১ মিলিগ্রাম
ফোলেট- ৪৯ আইইউ
ভিটামিন সি- ২২৮.৩ মিলিগ্রাম
ভিটামিন কে- ২.২ মিলিগ্রাম
ক্যালসিয়াম- ১৮ মিলিগ্রাম
আয়রন- ০.২৬ মিলিগ্রাম
ম্যাগনেসিয়াম- ২২ মিলিগ্রাম
ম্যাংগানিজ- ০.১৫ মিলিগ্রাম
ফসফরাস- ৪০ মিলিগ্রাম
পটাশিয়াম- ৪১৭ মিলিগ্রাম
সোডিয়াম- ২ মিলিগ্রাম
জিংক- ০.২৩ মিলিগ্রাম
লাইকোপেন- ৫২০৪ আইইউ
পেয়ারা ফল হিসেবে খাওয়া তো হয়ই, তৈরি করা হয় নানান খাবারও। পেয়ারায় প্রচুর পেকটিন থাকায় পেয়ারা দিয়ে চমত্কা র জ্যাম, জেলী, চাটনি ইত্যাদি তৈরি করা যায়। পেয়ারার জুস ক্যারিবীয় অঞ্চল ও হাওয়াইতে খুবই জনপ্রিয়।
পুষ্টিগুণের পাশাপাশি পেয়ারার রয়েছে ভেষজগুণও। যেমন –
• শ্বাসকষ্ট, অ্যাজমা, ঠান্ডাজনিত হাঁচি-কাশি প্রতিরোধে পেয়ারা খুবই উপকারী। এছাড়া খিঁচুনি ও এপিলেপসি প্রতিকারে পেয়ারা সহায়তা করে।
• কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে ও মুখের রুচি বাড়াতে পেয়ারা খুবই উপকারী।
• পেয়ারায় রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, লাইকোপেন ও খাদ্যআঁশ, যা ব্রেস্ট ক্যান্সার প্রতিরোধে সাহায্য করে।
• দাঁতের ব্যথায় পেয়ারার পাতা চিবুলে ব্যথা কমে যায়। এছাড়া ক্ষতে পেয়ারা পাতা পিষে প্রলেপ দিলে ক্ষত সেরে যায়।
• গাছের বাকল ও শেকড় আমাশয় ও কলেরার ওষুধ হিসেবে ব্যবহার করা হয়।
• দাঁতের ব্যথা, মুখের ঘা সারাতে পেয়ারা খুবই কার্যকর। স্কার্ভি রোগ প্রতিরোধেও পেয়ারা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
Tags: গুণেও অনন্য পেয়ারা, স্বাদে নয়